বড়লেখা উপজেলায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের (এলজিইডি) ২৪৭ কিলোমিটার পাকা রাস্তা রয়েছে। এ রাস্তাগুলো গ্রামীণ সড়ক হিসেবেই পরিচিত। গত এপ্রিল মাস থেকে শুরু হওয়া ভারী বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে উপজেলার নিম্নাঞ্চলের রাস্তাগুলোতে পানি উঠতে শুরু করে। বন্যার অবনতিতে গত দেড়মাস ধরে ৫০ কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা তলিয়ে যায়। ফলে জনসাধারণকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে উপজেলার বর্ণি, তালিমপুর ও সুজানগর ইউনিয়নের রাস্তাঘাট পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় ৯০ ভাগ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েন। ধারণা করা হচ্ছে, বন্যার পানিতে এসব রাস্তা বিধ্বস্ত হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।

সরেজমিনে উপজেলার সুজানগর ইউনিয়নের আজিমগঞ্জবাজার-ভোলারকান্দি, সুজানগর-বাঘমারা ভায়া কানুনগোবাজার, তেরাকুঁড়ি ভায়া কাঁঠালতলী রাস্তার বিভিন্ন স্থান এখনও পানিতে নিমজ্জিত থাকতে দেখা গেছে। স্রোতের তোড়ে বেশিরভাগ রাস্তা ভেঙ্গে গেছে। এসব রাস্তার স্থানে স্থানে অসংখ্য গভীর গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে এলাকাবাসী বিধ্বস্ত এসব রাস্তা দিয়ে চলাচল করছেন। উপজেলার দাসেরবাজার-বাছিরপুর ৪১ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে ১৬ কিলোমিটার এলাকা গত দেড়মাস ধরে নিমজ্জিত থাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। বড়লেখা পাখিয়ালা চৌমুহনী হতে হাকালুকি কানুনগোবাজার রাস্তার প্রায় ৭ কিলোমিটার পানিতে তলিয়ে আছে। দাসেরবাজার-বর্ণি-গোদামবাজার রাস্তার ৪ কিলোমিটার নিমজ্জিত থাকায় দুই ইউনিয়নের অন্তত ২০ হাজার মানুষজন নৌকায় চলাচল করছেন। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের অন্তত ২০টি রাস্তার ৫০ কিলোমিটার এলাকা নিমজ্জিত হওয়ায় বেহাল হয়ে পড়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে থাকা এসব রাস্তা ছাড়াও শুকনো স্থানেও বড় ও গভীর গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় এসব রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যুত ভূষণ পাল জানান, প্রথম দফায় ৪২ কিলোমিটার রাস্তা পানিতে নিমজ্জিত থাকার তথ্য সংগ্রহ করা হয়। পরের ভারী বর্ষণে আরও ৮ কিলোমিটার রাস্তা তলিয়ে যায়। এখন পর্যন্ত মোট ৫০ কিলোমিটার রাস্তা পানিতে তলিয়ে আছে। প্রাথমিক হিসেবে দেখা গেছে, রাস্তা ডেম্প ও বিধ্বস্ত হয়ে প্রায় ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে বন্যার উন্নতি না হলে এ হিসেব আরও বাড়বে।